বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় যৌতুকের দাবিতে হামলা, স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ায় দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় শুক্রবার আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ স্বামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। আদালত জামিন না মঞ্জুর না করে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের পশ্চিম বাগধা গ্রামের বারেক তালুকদারের মেয়ে সীমা বেগমের সামাজিকভাবে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি ইউনিয়নের মধুর নাগরা গ্রামের হোসেন মোল্লার ছেলে মোঃ সোহাগ মোল্লার সঙ্গে। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সীমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, বিবাহের সময়ে দিনমজুর বাবা ধার-দেনা করে স্বামী মোঃ সোহাগ মোল্লাকে নগত দেড় লক্ষ টাকা ও আসবাবপত্র সামগ্রী যৌতুক দেয়। বিবাহের পর থেকেই স্বামী সোহাগ ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য আমার উপর চাপ সৃষ্টি করে। আমি বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনতে রাজি না হওয়ায় স্বামী সোহাগ ও তার পরিবারের সদস্যরা আমাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালায় । এ ঘটনায় একাধিকবার পারিবারিকভাবে সালিস বৈঠক বসলেও কোন লাভ হয়নি। বুধবার রাতে স্বামী সোহাগ আমাকে বাবার বাড়ি থেকে পুনরায় এক লাখ টাকা আনতে বলে আমি রাজি না হওয়ায় ওই দিন রাত ১০টার দিকে শারীরিক নির্যাতন করে আমাকে রক্তাক্তভাবে জখম করেছে। এক পর্যায়ে মূমূর্ষ অবস্থায় আমাকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার আমার পরিবারকে খবর দিলে তারা আমাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসেন। অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে আগৈলঝাড়া থানা হাজতে থাকা স্বামী সোহাগ মোল্লা নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, দাম্পত্য কলহ থেকে ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রক্তাক্তভাবে নির্যাতনের কথা সঠিক নয়।
আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাজাহারুল ইসলাম বলেন, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের ঘটনায় সীমা বেগম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আগৈলঝাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামী সোহাগ মোল্লাকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ কোটালীপাড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার দুপুরে কোটালীপাড়া মধুর নাগরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে স্বামী সোহাগ মোল্লাকে (৪০) গ্রেপ্তার করে শুক্রবার বরিশাল আদালতে প্রেরণ করলে আদালত জামিন না মঞ্জুর না করে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।