গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় পাঁচ সহপাঠির বিরুদ্ধে উত্যক্ত ও যৌন হয়রানির অভিযোগ ৬ ছাত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর পাঁচ ছাত্রের বিরুদ্ধে ৬ সহপাঠিকে উত্যক্ত ও যৌন হয়রানি করার অভিযেগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত রোববার উত্যক্ত ও যৌন হায়রানীর শিকার ৬ ছাত্রী ৫ সহপাঠির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে । এ ঘটনা নিয়ে সোমবার বিদ্যালয় পরিচালণা কমিটির সালিশ বৈঠকে বসলেও কোন সিদ্বান্ত হয়নি বলে বৈঠকে উপস্থিত সদস্যরা জানান।
জানা গেছে, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ৫ ছাত্র দীর্ঘদিন যাবত তাদের ৬ সহপাঠিকে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত ও যৌন হয়রানী করে আসছিল। বিষয়টি ছাত্রীরা তাদের অভিভাবকদের কাছে জানালে পরিবারের লোকজন সম্প্রতি মৌখিকভাবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্যর কাছে নালিশ। কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ৬ সহপাঠির বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষক বিভুতি ভুষন সরকারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন ৬ ছাত্রী। অভিযোগে বলা হয়, দশম শ্রেনীর ছাত্র দীর্ঘ দিন যাবত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে তাদের প্রেমের প্রস্তাব দেন। তাতে সারা না দেওয়ায় ওই সহপাঠিরা উত্যক্ত ও যৌন হয়রানী করে আসছে। এ ছাড়া মুঠোফোনে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল বার্তা ও ছবি পাঠায়। উত্যক্ত ও যৌন হয়রানীর শিকার দশম শ্রেনীর এক ছাত্রী (এ্যামি বিশ্বাস) অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্ত সহপাঠিরা মুঠোফোনে আপত্তিজনক কথাবার্তা লিখেছে এবং বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে প্রায় সময় উত্যক্ত করে।
বিদ্যালয়ের পরিচালণা কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. রিপন বখতিয়ার অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি আগেও মৌখিকভাবে প্রধান শিক্ষককে জানালেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বিধায় ৬ ছাত্রী লিখিতভাবে প্রধান শিক্ষককের কাছে অভিযোগ করেছেন। বখাটেদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এভাবে উত্যক্ত ও যৌন হয়রানী করা হলে ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। বিদ্যালয় পরিচালণা কমিটির একাধিক সদস্য ও শিক্ষক জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে সোমবার একাধিকবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভা বসলে কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের মধ্যে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়ায় সিদ্বান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়। নাঘিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর অভিযুক্ত ২ ছাত্র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা কোন শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করিনি। মুঠোফোনে মোবাইল ম্যাসেঞ্জারে যা লিখেছি তার জন্য সহপাঠির কাছে ক্ষমা চেয়েছি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অপর তিন ছাত্রের কাছে ফোন করলে তারা মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাগিরপাড় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভুতি ভুষন সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরে আমি ম্যানেজিং কমিটি সদস্যদের নিয়ে সভা আহবান করেছি । ঘটনাকে কেন্দ্র করে কমিটির সদস্যরা দ্বিধা-বিভক্তি হয়ে পরার কারনে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। তবে খুব দ্রæততম সময়ের মধ্যে পুনরায় সভা আহবান করে বিষয়টি সমাধান করা হবে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর সরদার বলেন, সিদ্বান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয় । অভিযুক্ত ছাত্রদের অভিভাবককে উপস্থিত রেখে পুনরায় সভা ডেকে সবার সামনেই অভিযুক্তদের বিচার করা হবে। যাতে ভবিষৎতে আর কোন বখাটে ছাত্র কোন ছাত্রীকে উত্যক্ত করতে না পারে। এ প্রসঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাখাওয়াত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খোজ খবর নিয়ে বিষয়টি জেনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।