গৌরনদী
মামা ভাগ্নের পদ্মাসেতু দেখার স্বপ্ন পুরন হলেও অদেখা রয়ে গেল কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
নিজস্ব প্রতিবেদক, মামা ভাগ্নের স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখার স্বপ্ন পুরন হলেও অদেখা রয়ে গেল কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। পদ্মা সেতু ও কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য নিজ বাড়ি গাজীপুর কোনাবাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় রওয়ানা হয়ে কুয়াকাটা যাওয়ার পথে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুর উপজেলার নতুন শিকারপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মাইক্রোবাস ও দুর পাল্লার পরিবহন মোল্লা পরিবহনের মুখোমুখি সংর্ঘে প্রান হারান মামা শহিদুল ইসলাম ও ভাগ্নে হাসান ও প্রতিবেশীসহ একই মহল্লার ৬ জন। নিহতদের লাশ গৌরনদী হাইওয়ে থানার পুলিশ হেফাজাতে রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা) থানায় পৌছেননি নিহতের স্বজনরা।
নিহতের স্বজনা জানান, ঢাকা গাজীপুর কোনাবাড়ি মহল্লার স্থানীয় কতিপয় স্বজন ও যুবকরা স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত দেখার সিদ্বান্ত নেন। তারা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি মাইক্রোবাসযোগে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় গাজীপুর কোনাবাড়ি থেকে রওয়ানা হন। মাইক্রোবাস ঢাকা মেট্রো চ-১৯-২৬৫৩ তে উঠেন ব্যবসায়ী দলিল লেখকসহ ১০ জন ও আরেকটি মাইক্রোবাসে উঠেন এইচ,এস,সি ১৯৯৬ ব্যাচের ১৩ জন। এইচএসসি ব্যাচের ১৩ জনের মাইক্রোবাসটি আগেই নিরাপদে চলে যান। উজিরপুর এসে দূর্ঘটনা কবলিত হন ব্যবসায়ী ও দলিখ লেখকসহ ১০ জনের মাইক্রোবাসটি। এতে ঘটনাস্থলে ৪ জন ও বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২জন মোট ৬ জন মারা যান। নিহতরা সকলেই আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী।
নিহত মোঃ হাসানের ভাগ্নে ও কুষ্ঠিয়া ইসলামি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ সোলায়মন হোসেন (২৪) জানান, পদ্মাসেতু ও সমুদ্র সৈকত দেখার জন্য মামা ব্যবসায়ী মোঃ হাসান (৩৬), হাসানের মামা দলিল লেখক মোঃ শহিদুল ইসলাম (৪০) বন্ধু দলিল লেখক রুহুল আমিন (৪৫) ও বন্ধু কোনাবাড়ি বাজারের চায়ের দোকানদার আব্দুর রহমান (৪৬)সহ প্রতিবেশী একই মহল্লার ১০ জন মাইক্রোবাসে বৃহস্পতিবার সকালে কোনাবাড়ি থেকে রওয়ানা হন। সকাল ১০টার দিকে পদ্মাসেতু দেখে সেতু পার হয়ে কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে গাড়ি ছাড়েন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উজিরপুর নতুন শিকারপুরে তারা বাস দূর্ঘটনায় প্রান হারান। নিহত মোঃ হাসানের ভাগ্নে ও কুষ্ঠিয়া ইসলামি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র মোঃ সোলায়মন হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার মামা হাসান ও তার মামা শহিদুল ইসলামের স্বপেরœ পদ্মা সেতু দেখার স্বপ্ন পুরন হলেও অদেখা রয়ে গেল কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। মামা হাসানের স্ত্রী ও ৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে ও শহিদুল ইসলামের স্ত্রী এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। পরিবার দুটি উপার্জনক্ষম কেই থাকল না। হাসানের স্ত্রী শাহিদা বেগম (৩০) বলেন, স্বামী ও কন্যাকে নিয়ে ভালই ছিলাম, সমুদ্র সৈকত দেখতে এসে ও আমাদের ছেড়ে চলে গেল। এখন আমাদের কি অবস্থা হবে, কে আমাদের দেখবে। গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ বেলাল হোসেন বলেন, নিহতদের লাশ গৌরনদী হাইওয়ে থানার পুলিশ হেফাজাতে রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এদিকে গৌরনদী হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট মাহাবুব হোসেন বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।