গৌরনদী
উপ-আনুষ্ঠিানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিএলপি প্রকল্প ॥ উৎকোচ নিয়ে অযোগ্যদের তালিকাভূক্ত করার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালযের অধীনে বরিশালের উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মৌলিক শিক্ষা প্রকল্প (বিএলপি) প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সু-বিমল চন্দ্র হালদারের বিরুদ্ধে উৎকোচ নিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে যোগ্যদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের বিএলপি প্রকল্পে তালিকাভূক্ত করে আরএফপি প্রদান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ প্রকল্পে বরিশালের ৫টি উপজেলায় এক কোটি ৩১ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়।
বঞ্চিত এনজিও প্রতিনিধিদের অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালযের অধীনে বরিশালের উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিএলপি প্রকল্পের আওতায় প্রকল্পের কার্যক্রমের নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলার ৩শ কেন্দ্র স্থাপন করে দিন রাত দুটি সেসনে পাঠদান করা হবে। এজন্য ৬শ শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ১৮ হাজার মানুষকে প্রশিক্ষন দিয়ে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে জ্ঞান অর্জন সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে ।
সংশ্লিস্ট তালিকায় দেখা যায়, বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, হিজলা, মুলাদী ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হতদরিদ্র অশিক্ষিত মানুষকে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে ৬ মাসের প্রশিক্ষন প্রদান ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিএলপি প্রকল্পে বাস্তবায়নে স্থানীয় এনজিওর মধ্যে আরএফপি প্রদানের জন্য উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো সম্প্রতি পত্রিকায় বিজ্ঞাপ্তির দিয়ে আগ্রহপত্র আহবান করেন। এতে প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান আগ্রহপত্র জমা দেন। যোগ্যতার ভিত্তিতে বাছাই করে ২০টি বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে তালিকাভূক্ত করার কথা। কিন্তু বরিশালের উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিএলপি প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সু-বিমল চন্দ্র হালদার তালিকা প্রননয়নে চরম অনিয়ম, দূর্নীতি ও উৎকোচ নিয়ে অযোগ্যদের তালকিাভূক্ত করেছেন বলে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছেন।
তালিকায় দেখা যায়, অগৈলঝাড়া উপজেলায় সেইন্ট বাংলাদেশ, ভোসড, জিডিপিএএস, গৌরনদী উপজেলায় আভাস, আরইডিও, বিইউএস, হিজলা উপজেলায় দাড়িয়াল জনকল্যান সংস্থা, রীচ টু আনরীচড, বন্ধন সোসাল ডেভলপমেন্টে প্রজেক্ট, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় সেইন্ট বাংলাদেশ, দেশ গড়ি, আভাস ও মুলাদী উপজেলায় এইড অর্গানাইজেশন, দাড়িয়াল জনকল্যান সংস্থা ও রুরাল ইকোনোমিক্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশকে তালিকাভূক্তি করা হয়েছে। তালিকাভূক্ত হতে হলে উপজেলা পর্যায়ে অফিস ও কার্যক্রম থাকা বাধ্যতামূলক কিন্তু তালিকাভূক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোন অফিস বা কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে নেই।
গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় কার্যক্রম পরিচালনাকারী বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বরিশাল সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. আইয়ুব আলী মৃধা অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সু-বিমল চন্দ্র হালদার উৎকোচ নিয়ে অফিস, কার্যক্রম ও অভিজ্ঞাহীন প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভূক্ত করেছে। আমরা টাকা দিতে পারি নাই বিধায় তালিকায় নাই। লাভ দাই নেইবর এর নির্বাহী পরিচালক মাহুমুদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, কোনদিন উপনুষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নেননি, অফিস নেই, নামসর্বশ্ব প্রতিষ্ঠানকে উৎকোচ নিয়ে তালিকাভূক্ত করেছে। আমার প্রতিষ্ঠান গত ১৬ বছর যাবত উপনুষ্ঠানিক কার্যক্রমেযুক্ত এবং সকল শর্ত থাকা সত্বেও উৎকোচ না দেওয়ায় তালিকাভূক্ত করা হয়নি। ব্রেভ এর নির্বাহী পরিচালক এম,এন আনোয়ার উল্লাহ বলেন, আবেদন না করেও (সেইন্ট বাংলাদেশ আবেদন করেনি) তালিকাভূক্ত হয়েছে অথচ সকল যোগ্যতা থাকা সত্বেও তালিকায় নেই। অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর একটি সূত্র জানান, উপজেলাগুলোতে অফিস নেই শর্ত অনুযায়ী অযোগ্য সত্বেও তালিকাভূক্ত করে আরএফপি প্রদান করা হয়েছে। উপনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মৌলিক শিক্ষা প্রকল্প (বিএলপি) প্রকল্পের সহকারী পরিচালক সু-বিমল চন্দ্র হালদারের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগের সত্যতা নাই, কমিটি যাচাই বাছাই করে আরএফপি প্রদান করেছে। যারা অযোগ্য তারাই অভিযোগ করেছে।
উল্লেখ্য ঃ উপ-আনুষ্ঠিানিক শিক্ষা ব্যুরোর বিএলপি প্রকল্প অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগে প্রকল্পটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নুতন করে চালু করা হয়। এ প্রসঙ্গে সহকারী পরিচালক বলেন, দূর্নীতি অনিয়ম নয়, নীতিমালা সংশোধনীর জন্য স্থগিত ছিল।