গৌরনদী
পাওনাদারের চাপে হতাশাগ্রস্থ দেনাদার যুবকের আত্মহত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাওনাদারের চাপ সহ্য করতে না পেরে হতাশাগ্রস্থ হয়ে দেনাদার বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের যুবক মাহেন্দ্রা চালক আবুল কালাম সেরনিয়াবাদ (৪৫) আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার কালাম বিষ পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় মৃত আবুল কালাম সেরনিয়াবাতের ছেলে মোঃ রাজন সেরনিয়াবাত বাদি হয়ে চার পাওনাদারকে অভিযুক্ত করে সোমবার গৌরনদী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছে।
স্থানীয় লোকজন, পরিবার ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের ছেলে টরকী অটোটেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের লাইনম্যান মাহেন্দ্রা চালক আবুল কালাম সেরনিয়াবাত (৪৫) স্থানীয় ৫/৬ জন দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ষ্টাম্প দিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋৃন নেন। চড়া সুদে ঋৃন নেওয়ার কারনে মহাজনদের প্রতিদিন প্রায় ৭/৮ হাজার টাকা সুদ পরিশোধ করতে হত। মাহেন্দ্রা চালিয়ে যা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছিল না। ফলে পাওনাদারের চাপে বেশ কিছু দিন যাবত মারাত্মকভাবে হতাশায় ভূগছিল আবুল কালাম সেরনিয়াবাত। হতাশা থেকে সে আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা জানান।
মৃত কালাম সেরনিয়াবাতের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (৪০) অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার সকালে আমার স্বামী কালাম ট্রিপ নিয়ে গৌরনদীর ভূরঘাটা বাসষ্টান্ডে যান। সেখানে পাওনাদার গৌরনদী উপজেলার ভূরঘাটা গ্রামের চান্দু হাওলাদারের ছেলে কালাম হাওলাদার ওরফে বরকি কালাম আমার স্বামীকে আটকে বেদমভাবে মারধর করে এবং তার মাহেন্দ্রা গাড়িটি রেখে আহত অবস্থায় টেম্পু উঠিয়ে পাঠিয়ে দেন। রোববার বিকেলের মধ্যে টাকা পরিশোধ চাপ সৃষ্টি করেন। চাপ সইতে না পেরে বাড়িতে এসে সে বিষ পান করে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ওই রাতেই তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকালে মারা যান। মৃত কালাম সেরনিয়াবাতের একাধিক স্বজন জানান, সে (কালাম সেরনিয়াবাত) স্থানীয় নাহার বেগমের কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা, বরকি কালামের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ও রায়হান হোসেনসহ ৫/৬ জনের কাছ থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকা ঋৃন নেন। কালাম সেরনিয়াবাতের স্যালিকা রুমা বেগম জানান, কালাম চড়া সুদে বিভিন্ন সুদী কারবারীর কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা ঋন নেন। ভুরঘাটা এলাকার আবুল কালাম ওরফে বরকি কালামকে এক হাজার পাঁচশ টাকা, নাহার বেগমকে প্রতিদিন তিন হাজার টাকাসহ প্রতিদিন ৭/৮ হাজার সুদ দিতে হত। তা শোধ করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ে বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যাকারী কালাম সেরনিয়াবাতের ছেলে রাজন সেরনিয়াবাত বাদি হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। এ ব্যাপারে তথ্যানুসন্ধান চলছে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।