গৌরনদী
গৌরনদীতে সাড়ে তিন মাসের শিশুপুত্রকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে মা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদীতে নিজ নিজ শিশুপুত্রকে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি গর্ভধারীনি মা ছালেহা বেগমকে (৩৪) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর সদর থেকে গ্রেপ্তার করেছে গৌরনদী মডেল থানার পুলিশ। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বালতির পানিতে চুবিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে মা ছালেহা বেগম। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার গ্রেপ্তারকৃত মাকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার র্ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন জানান, উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামে গর্ভধারীনি মা মা সালেহা বেগম গত শনিবার বালতির পানিতে চুবিয়ে সাড়ে তিন মাস বয়সের নিজ শিশুপুত্রকে হত্যা করে। এ ঘটনায় গত রোববার নিহত শিশু পুত্রের বাবা সাগির হোসেন তালুকদার (৩৮) বাদি হয়ে স্ত্রী সালেহা বেগমকে (৩৪) আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের শেষে পরিবারে কাছে হস্তান্তর করে। ওসি মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর শিশু হত্যার একমাত্র আসামি গা ঢাকা দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ কামাল হোসেন ঘটনার ৬দিন পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদারীপুর সদরে এক নিকট আত্মীয়র বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সালেহা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে সালেহা নিজ পুত্র সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। সালেহা বেগম পুত্র সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করলেও কি কারনে হত্যা করেছে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে এ ব্যপারে মুখ খোলেননি। শুক্রবার সালেজা বেগমকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এজাহারে বাদি নিহতের বাবা সাগির হোসেন তালুকদার উল্লেখ করেন, তিনি আগৈলঝাড়া উপজেলার ছয়গ্রাম গ্রামের আমিনুল ইসলামের কন্য সালেহা বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে। শনিবার রাত ১১টা থেকে স্ত্রী সালেহা বেগম ও তার সাড়ে তিন মাস বয়সের শিশুপুত্র জুবায়ের তালুকদারকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন স্থানে ও স্বজনদের বাড়িতে খোজাখুজি করে না পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে শনিবার রাত ১২ টার দিকে গরুর ফার্মের পিছনে বালিতির পানির মধ্যে শিশুপুত্র জুবায়ের তালুকদারকে উল্টোভাবে চুবিয়ে ধরতে দেখে চিৎকার দিলে সালেহা বেগম দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
আসামি সালেহা বেগমের স্বজন মোশারফ হোসেন, জাহানারা বেগম জানান, তৃতীয় পুত্র জুবায়ের তালুকদারের জন্মের পর থেকে সালেহা বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে এবং তার আচরনে অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করে। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারনে শিশু পুত্রকে হত্যা করেছে। শিশু জুবায়েরকে হত্যার আগে মাঝে মধ্যে সালেহা বেগম বলত শিশুপুত্র জুবায়ের সংসারে থাকলে সংসারের সুখ নষ্ট হবে তাকে মেরে ফেলা উচিত।