গৌরনদী
গৌরনদীতে সাড়ে তিন মাসের শিশুপুত্রকে হত্যা করেছে গর্ভধারীনি মা, মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামে শনিবার দিবাগত রাতে মা সালেহা বেগম ওরফে কলি বালতির পানিতে চুবিয়ে সাড়ে তিন মাস বয়সের নিজ শিশুপুত্রকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাগির হোসেন তালুকদার (৩৮) বাদি হয়ে স্ত্রী সালেহা বেগম ওরফে কলিকে (৩৪) আসামি করে রোববার বিকেলে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত শিশুর গর্ভধারীনি মা ছালেহা বেগম কলি পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড়দুলালী গ্রামের মৃত সোবাহান সরদারের পুত্র, গরুর খামারের মালিক সাগির হোসেন তালুকদার আগৈলঝাড়া উপজেলার ছয়গ্রাম গ্রামের আমিনুল ইসলামের কন্য সালেহা বেগম ওরফে কলিকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে। একাধিক স্বজন জানান, শনিবার রাত ১১টা থেকে সাগির হোসেন তালুকদারের স্ত্রী সালেহা বেগম কলি ও তার সাড়ে তিন মাস বয়সের শিশুপুত্র জুবায়ের তালুকদারকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন স্থানে ও স্বজনদের বাড়িতে খোজাখুজি করে তাদের না পেয়ে বাড়ি ফেরার পথে শনিবার রাত ১২ টার দিকে গরুর ফার্মের পিছনে বালিতির পানির মধ্যে শিশুপুত্র জুবায়ের তালুকদারকে উল্টোভাবে চুবিয়ে ধরতে দেখে স্বজনরা ডাক চিৎকার দিলে সালেহা বেগম দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। স্থানীয় একাদিক ব্যক্তি ও কলির স্বজনরা জানান, তৃতীয় পুত্র জুবায়ের তালুকদারের জন্মের পর থেকে সালেহা বেগম মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে এবং তার আচরন কিছুটা অস্বাভাবিক ছিল। মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারনে, না অন্য কোন কারনে শিশু পুত্রকে হত্যা করেছে তা স্পষ্ট নয়। বাদি সাগির হোসেন তালুকদার বলেন, স্ত্রী সালেহা বেগমের মধ্যে মাঝেমধ্যে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরন লক্ষ্যনীয় হলেও সন্তান হত্যা করার মত মানুষিক ভারসাম্যহীন নয়। তাছাড়া মানুষিক ভারসাম্যহীন হলে সে পালাতো না।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, নিজ শিশু পুত্রকে হত্যার ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা সাগির হোসেন তালুকদার বাদি হয়ে স্ত্রী সালেহা বেগম ওরফে কলিকে আসামি করে রোববার বিকেলে গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত শিশুর গর্ভধারীনি মা ছালেহা বেগম কলি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। সালেহাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে শিশু হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে।