গৌরনদী
টরকী পুলিশ ক্যাম্পের পাশে ১৩টি দোকানে দূধর্ষ ডাকাতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের এতিহ্যবাহী বৃহৎ ব্যবসায়ী বন্দর টরকী বন্দরে শনিবার রাতে দূধর্ষ ডাকাতি সংঘঠিত হয়। ডাকাতরা টরকী পুলিশ ক্যম্প থেকে প্রায় দেড়শ গজ দুরে ১৩ টি দোকানের তালা ভেঙ্গে প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে ডাকাতি করে সব মিলিয়ে নগত প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় ডাকাতের হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে।
বন্দরের ব্যবসায়ী, ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে মুখোশ পড়া অস্ত্রধারী ৪৫/৫০ জনের ডাকাত দল টরকী বন্দরে উত্তরপূর্ব প্রান্তে বড় ব্রীজের উপর ও টরকী বন্দরের ভিতরে দুটি চেক পোষ্ট বসিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে। ২০/ ২৫ জন চেক পোস্টে পাহারা দিলেও আরো প্রায় ২০/২৫ জনের ডাকাত টরকী বন্দরের রায় পট্রি ৬টি, মন্দির গলি ৫টি ও মধ্য চরে ২টি দোকানের তালা বিশেষ যন্ত্র দ্বারা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ ফিল্মি ষ্টাইলে ডাকাতি করে প্রায় নগত প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। এ সময় ডাকাত দল প্রায় ৪০ জন নাইট কোচ যাত্রী, রাতে আগত মাছ ব্যাবসায়ী ও পথচারী রসি দিয়ে বেধে তাদের সর্বস্ব লুপ করে নিয়ে গেছে।
গোবিন্দ সাহা জানান, তার ছেলে মানিক সাহা (৩৮) দোকানে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত পোনে তিনটার দিকে ১০/১২ ডাকাত দোকানের সার্টার ভেঙ্গে ফেলে ভিতরে ঢুকে ছেলেকে মারধর করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১ ঘন্টা সময় ধরে সিন্দুক ভেঙ্গে নগত ১২ লাখ টাকাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ছাড়া এক তৈল ব্যবসায়ীর গোপন ভোল্ট ভেঙ্গে প্রায় ৩০/৩৫ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। জেরিন এন্টাপ্রাইজের মালিক গাজী জাকির হোসেন জানান, তার দোকানের তালা ও সিন্দুক ভেঙ্গে দোকান তছনছ করে সিন্দুকে থাকা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তালুকদার মেডিকেল হল বিকাশ পয়েন্টের মালিক অহিদুল ইসলাম জানান, ডাকাতরা বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে দোকানের ৪টি তালা ভেঙ্গে নগত পোনে ৪ লাখ টাকা লুট করেছে। এ ছাড়া মোল্লা এন্টাপ্রাইজ, পূন্য রায়ের গদি ঘর, নিত্য রায়, গোলক রায়, পরিমলের মুদি দোকান, বিপুল দাসসহ ১৩ টি দোকানে ডাকাতরা আড়াই ঘন্টা বসে ডাকাতি করে ট্রলার নিয়ে চলে যায়।
টরকী বন্দরের ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টরকী বন্দরের ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। টরকী পুলিশ ক্যাম্প থেকে ডাকাতিস্থলে পৌছতে ২/৩ মিনিট সময় লাগে কিন্তু ডাকাতি চলাকালীন সময়ে টরকী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শাহীন সরদারকে মুঠোফোনে ডাকাতির ঘটনা জানিয়ে পুলিশের সাহায্য চাইলেও তারা ঘটনাস্থলে আসেননি। টরকী বন্দরের সহ¯্রাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মাসে লাখ টাকা চাঁদা নেন অথচ ব্যবসায়ীদের সাহায্যে আসেন না। একাধিক নৈশ প্রহরী বলেন, ডাকাতরা একাধিক ট্রালার নিয়ে নদীর ঘাটে এসে কমান্ডো ষ্টাইলে বন্দরে ঢুকে চেকপোষ্ট বসিয়ে ডাকাতি করে। এ সময় প্রায় ৫০ জন দোকানী, পথচারী ও নৈশ কোচেরযাত্রীকে বেধে রাখে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে টরকী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীন সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে কেউই মুঠোফোনে ডাকাতির খবর জানাননি রাত ৪টার দিকে নৈশ প্রহরী এনে আমাকে জানালে তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌছি। মাসিক চাঁদা দেওয়ার কথা সঠিক নয়। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ডাকাতির খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তে অনুসন্ধান চলছে খুব শীঘ্রই রহস্য উৎঘাটনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে।