বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় বরযাত্রী বহরে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতার হামলা, মাইক্রো-মটরসাইকেল ভাঙচুর,আহত-৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভঅপতির নেতৃত্বে বরযাত্রী বহরে হামলা চালিয়ে একটি মাইক্রোবাস, দুটি মটরসাইকেল ভাঙচুর ও ৫ জনকে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে প্রধান আসামি করে শনিবার আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত এজাহারভূক্ত এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ন শ্রমিকলীগীগের সহ-সভাপতি শেখ আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বেচ্ছসেবকলীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার দুজনেই এলাকায় বালুর ব্যবসা করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি শেখ আব্দুর রাজ্জাক বালুর শিপ নিয়ে কোটালীপাড়া উপজেলার মধুর নাগরা যাবার পথে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদার তাঁর ভাই মিজান সিকদার শিপ আটক করে চাঁদা দাবি করে। এ সময় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় শেখ রাজ্জাকের কর্মচারী রাসেল শেখকে বেদমভাবে মারধর করে। খবর পেয়ে শেখ রাজজ্জাক এর প্রতিবাদ করলে তাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয় এতে তাদের মধ্যে বিরোধ আরো চরম পর্যায়ে পৌছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ন শ্রমিকলীগীগের সহ-সভাপতি শেখ আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে শাওন শেখের বিয়ে পাকাপাকি হয় একই উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের চক্রিবাড়ি গ্রামে। শুক্রবার দুপুরে ছেলের বিয়ের বরযাত্রী বহর নিয়ে কনের বাড়িতে যাওয়ার পথে দুপুর ২টায় পয়সারহাট বাগধা সড়কের পথিমধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলার স্বেচ্ছাসেবকলীগ ফিরোজ সিকদারের বাড়ির সামনে পৌছলে ফিরোজ সিকদার ও তার ভাই মিজান সিকদার বরযাত্রীবাহি গাড়ি ও মটরসাইকেল বহরের গতিরোধ করে। এ সময় ফিরোজ সিকদারের ভাই মিজানের সঙ্গে আমার ভাতিজা আজিজুল শেখের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফিরোজ সিকদারের নেতৃত্বে তার সমর্থক রুমি সিকদার, মনির সিকদার, সোহাগ সিকদারসহ ৫/৬ সন্ত্রাসী দেশীয় ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় । এ সময় বরযাত্রী বহরে থাকা একটি মাইক্রোবাস ও দুটি মটরসাইকেল ভাঙচুর এবং আমার ভাতিজা আজিজুল শেখ, আরিফ শেখ, অতিথি মোতালেব সরদারসহ ৫ জনকে পিটিয়ে আহত করে। আহত তিন জনকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদারের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি হামলার ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, শুক্রবার দুপুরে আমি বাবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মসজিদে মিলাদে ছিলাম। শুনেছি ছোট ভাই মিজান সিকদারের সঙ্গে ও শেখ আব্দুর রাজ্জাকের ভাতিজা আজিজুল শেখের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু আমাকে হয়রানী করতে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, বরযাত্রী বহরে হামলার ঘটনায় বরের বাবা শেখ আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বেচ্ছসেবকলীগের সভাপতি ফিরোজ সিকদারকে প্রধান আসামিসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শনিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই দিন পুলিশ ঘটনায় জড়িত এজাহারভূক্ত সোহাগ সিকদারকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে।