গৌরনদী
উজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চিকিৎসায় ইউএনওর আর্থিক সহায়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও তার পুত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা। অর্থ সংকটে পরিবারের আহত তিন সদস্যর চিকিৎসা চলছিল না। খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চিকিৎসা সেবার জন্য আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলেন উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রনতি বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার পরিবারের হাতে নগত ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
নিহত মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন ছোট কন্যা বরিশাল ব্রেজমোহন (বিএম) কলেজের অনার্সের শেষ বর্ষের ছাত্রী স্বর্না আক্তার জানান, অর্থ সংকটের কারনে পরিবারের আহত তিন সদস্যর চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে। এই বিপদের দিনে কেউ আমাদের পাশে দাড়ায়নি । বিষয়টি জানার পরে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রনতি বিশ্বাস নিহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের আহত তিন সদস্যদের চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার স্বর্না আক্তারের হাতে নগত ২০ হাজার টাকা তুলে দেন। এ সময় নিহত মুক্তিযোদ্ধার আরেক কন্যা সোনিয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও বলেন, জাতির গর্বিত বীর সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন ও তার বড় ছেলেকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা । হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চিতকরনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোড়ালো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই পরিবারের আহত দুই ছেলে ও পুত্র বধূর চিকিৎসার জন্য আপাতত নগত ২০ হাজার টাকা দেওয়া হল প্রয়োজনে এ সহায়তা অব্যহত থাকবে। আর্থিক সহায়তা পেয়ে ইউএনওকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্বর্না আক্তার বলেন, এই বিপদের সময় আমাদের পাশে দাড়িয়ে ইউএনও ম্যাডাম দেশের প্রতি ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান জানালেন। এ জন্য আমি পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞ।
পারিবারকি সূত্রে জানা গেছে, হামলার শিকার গুরুতরভাবে জখম মুক্তিযোদ্ধা ও বড় ছেলে মারা গেছে। এখনো বড় ছেলের স্ত্রী রোজিনা বেগম, মেঝ ছেলে সোহাগ তালুকদার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ছোট ছেলে জুয়েল তালুকদার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । বর্তমানে অর্থ সংকটে গুরুতরভাবে আহত তিন জনের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অর্থের অভাবে আহতদের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছে না পরিবারটি। তাই গুরুতর আহত সোহাগ তালুকদার ও রোজিনার অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ার সত্বেও ঢাকায় রেখে চিকিৎসা খরচ চালানোর সামর্থ না থাকায় ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে নাম কেটে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসতে হচ্ছে।
জানা গেছে, জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২৯ জুলাই সকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামলাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন তালুকদার তার পুত্র বিপ্লব তালুকদার, মেঝ পুত্র সোহাগ তালুকদার, ছোট পুত্র জুয়েল তালুকদার ও বড় পুত্রবধূ রোজিনা বেগমকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন মারা যান। বড় ছেল বিপ্লব শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। বড় ছেলের স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৮) ও মেঝ পুত্র সোহাগ তালুকদার ঢাকায় ছোট ছেলে জুয়েল বরিশালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় ৩১ জুলাই ৩২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১২জনসহ ৪৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।