গৌরনদী
উজিরপুরে মুক্তিযোদ্ধা হত্যার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার, ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও তার বড় ছেলেকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে (৩২) পাশ্ববর্তি বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নের লবনসাড়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । বুধবার গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেড আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসিতদন্ত) মোঃ মমিন উদ্দিন। এদিকে অর্থ সংকটে চিকিৎসা করতে পারছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিহত মুক্তিযোদ্ধার দুই ছেলে ও পুত্র বধূর।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলী আর্শেদ জানান, উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে কুপিয়ে বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও তার বড় ছেলেকে হত্যার প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে (৩২) পাশ্ববর্তি বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারি ইউনিয়নের লবনসাড়া গ্রাম থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বুধবার গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামি সবুজ সেপাইকে বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেড আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসিতদন্ত) মোঃ মমিন উদ্দিন। এ নিয়ে উজিরপুর ডবল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন ছোট কন্যা বরিশাল ব্রেজমোহন (বিএম) কলেজের অনার্সের শেষ বর্ষের ছাত্রী স্বর্না আক্তার জানান, হামলার শিকার গুরুতরভাবে জখম বাবা ও বড় ভাই মারা গেছে। এখনো বড় ভাইর স্ত্রী রোজিনা বেগম, মেঝ ভাই সোহাগ তালুকদার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ছোট ভাই জুয়েল তালুকদার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অবস্থা খুব একটা ভাল না। বর্তমানে অর্থ সংকটে গুরুতরভাবে আহত তিন জনের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মামলার বাদি আহত জুয়েল তালুকদার বলেন, অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছি না তাই গুরুতর আহত আমার মেঝো ভাই সোহাগ তালুকদার ও বড় ভাবি রোজিনার অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ার সত্বেও ঢাকায় রেখে চিকিৎসা খরচ চালানোর সামর্থ না থাকায় এখন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে নাম কেটে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসতে হচ্ছে। চিকিৎসা খরচ চালাতে আমরা খুব হিমসিম খাচ্ছি। এই বিপদের দিনে কেউ আমাদের পাশে দাড়ায়নি ।
জানা গেছে, জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ২৯ জুলাই সকালে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামলাইল ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার (৭২) তার পুত্র বিপ্লব তালুকদার (৪০), মেঝ পুত্র সোহাগ তালুকদার (৩৭), ছোট পুত্র জুয়েল তালুকদার (৩৫) ও বড় পুত্রবধূ রোজিনা বেগম (২৮)কে ধারাল অস্ত্র দিয়ে উপর্যপুরি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে প্রতিপক্ষ একই গ্রামের নুরুল ইসলাম (৪৫), মোঃ জলিল সেপাই (৫৫) সবুজ সেপাই (৩২)সহ সন্ত্রাসীরা। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন মারা যান। তার তিন পুত্র ও এক পুত্র বধূকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে বড় পুত্র বিপ্লব তালুকদার (৪০) ও তার স্ত্রী রোজিনা বেগম (২৮) ও মেঝ পুত্র সোহাগ তালুকদারকে ৩০ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় সেখানে গত শনিবার দুপুরে বড় ছেলে বিপ্লব মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত মুক্তিযোদ্ধার মেঝ পুত্র মোঃ জুয়েল তালুকদার (৩৫) বাদি হয়ে ৩১ জুলাই ৩২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১২জনসহ ৪৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।