গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় দুলা ভাইর বাড়িতে বেড়াতে আসা যুবতিকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ বাগধা গ্রামের দুলা ভাইর বাড়িতে বেড়াতে এসে দুলা ভাইর প্রতিপক্ষের সমর্থকরা শাালিকাকে (২৮) গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করে তা ভিডিও ধারন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি ও ভিডিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিন বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিণ বাগধা গ্রামের ইমদাদুল হকের সাথে একই গ্রামের কাশেম খানের জমাজমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সম্প্রতি সময়ে কাসেম খান প্রতিপক্ষ ইমদাদুল হক খানসহ ১০ পরিবারের বাড়িতে প্রবেশের পথে বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। ইমদাদুল হক জানান, রোববার সন্ধ্যায় পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী কাটাখালী থেকে তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন স্ত্রীর দুই ছোট বোন ও ছোট ভাই । তারা প্রতিবেশীর সাথে দুলা ভাইর বিরোধের বিষয়টি না জনে কাশেম খানের দেয়া বেড়া অতিক্রম করে দুলা ভাইর বাড়িতে ঢোকার সময়ে কাশেম খানের ছেলে ইলিয়াস খান (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম (৩৮) পথরোধ করে। এ সময় শালি (২৮) এ নিয়ে কথা বললে ইলিয়াস খানের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে ইলিয়াস খান ও তার স্ত্রী রেখা বেগম শালিকাকে মারধর করে গাছের সাথে বেঁধে রাখেন।
নির্যাতিতা অভিযোগ করে বলেন, ইলিয়াস খান ও তার স্ত্রী রেখা বেগম আমাকে বেদমভাবে মারধর করার এক পর্যায়ে রসি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখেন। এ সময় ইলিয়াসের ছেলে আহাদ হোসেন খান তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে গাছের সাথে আমাকে বেঁধে রাখার দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও ধারন করেন। ভিডিও ধারন করার সময় আমার ছোট বোন ও ছোট ভাই বাধা দিলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। বিষয়টি দেখার পরে স্থানীয় পরেশ দাস, আবুল কালাম সরদার, আব্দুল হক ঢালী গ্রামের লোকজন নিয়ে এসে আমার বাঁধন খুলে মুক্ত করে দেন। আবুল কালাম সরদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিদেশী মেহদান হয়তো তারা বিরোধের বিষয়টি না জেনে বন্ধ করা পথ দিয়ে যাচ্ছিল তাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো কোন মতেই সমুচীন হয়নি। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ইমদাদুল হক অভিযোগ করে বলেন, আমার সাথে বিরোধ রয়েছে কিন্তু আমার মেহমান শ্যালক ও শ্যালিকা কোন দোষ করেনি তাদের উপর হামলা এবং শালিকা অমানবিকভাবে নির্যাতন এবং অর্ধ উলঙ্গ করে পেটানো হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ইলিয়াস খানকে মুঠোফোন কল করতে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তার বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম খান গাছে বেধে নির্যাতন করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যাতায়াতের পথ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ইমদাদুলের সাথে বিরোধ চলে আসছে ওই বিরোধপূর্ন বন্ধ করা পথ দিয়ে জোরপূর্বক যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু অপ্রতিকর ঘটনা ঘটেছে। আমরা কারোর উপর হামলা করিনি বরং ইমদাদুল হক লোকজন নিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে। এ প্রসঙ্গে বাগধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ভাট্টি বলেন, বিদেশী মেহমান পথ দিয়ে যাওয়ার অপরাধে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা অমানবিক এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম ছরোয়ার এ প্রসঙ্গে বলেন, যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারাই থানায় উল্টো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্তে আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ মনিরুজ্জামানকে পাঠানো হলে নারীকে নির্যাতনের ঘটনা বেড়িয়ে আসে। নির্যাতিতা নারী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে । নির্যাতিতার পরিবার পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।