গৌরনদী
গৌরনদীতে করোনাকালীন সময়ে অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধার সৎকার অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালীন সময়ে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নন ও পৌর এলাকার বাধ্যর্কজনিত, হৃদ রোগ, লিভার সিরোসিস ও করোনায়সহ বিভিন্ন রোগে অর্ধশত মুক্তিযোদ্ধা মারা যান। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত কমিটি না থাকায় সৎকার কার্যক্রম সম্পন্ন করেত বিড়ম্ববনার শিকার হতে হয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধাদের। করোনার দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশী সময়ে মারা যাওয়া প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার সৎকার অনুষ্ঠান ও রাষ্ট্রিয় মর্যদায় প্রদান অনুষ্ঠানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নেন গৌরনদী উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খান শামছুল হক ।
গৌরনদী উপজেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ঘোষনা অনুযায়ি ২০১৫ সালে গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচিত কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। তার পর থেে গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। গত ৬ বছর ধরে মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন পদাধিকার বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও। এ সময়ে ১০৪ জন মুক্তিযোদ্ধা মারা যান তার মধ্যে বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালীন সময়ের গত দেড় বছরের ২১ জুলাই পর্যন্ত মারা যান অর্ধ শত মুক্তিযোদ্ধা । ইউএনও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব গ্রহনের পরে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে ৮, বার্থী ইউনিয়নে ৮, চাঁদশী ইউনিয়নে ২০, মাহিলাড়া ইউনিয়নে ১২, বাটাজোর ইউনিয়নে ১৯, নলচিড়া ইউনিয়নে ১৬ ও সরিকল ইউনিয়নে ১৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যান। এ সকল মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্্িরটয় মর্যদায় দাফন করা হয়।
গৌরনদীর কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা জানান, বাধ্যর্কজনিত কারনে ও বিভিন্ন রোগ-শোকে একের পর এক মারা যাচ্ছে ৭১‘র রনাঙ্গনের সহযোদ্ধারা। করোনাকালীন সময়ে মারা গেছেন প্রায় অর্ধ শত সহযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমিটি না থাকায় এসব মুক্তিযোদ্ধাদের সৎকার অনুষ্ঠানে বিড়ম্ভবনা দেখা দেয়। তারপরেও করোনার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাষ্ট্রিয় মর্যদার সালামি অনুষ্ঠানে অংশ নেন গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস, গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরিফুল ইসলাম প্রিন্স, গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন। প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগীতা প্রদান ও সহযোদ্ধাদের সৎকার অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সম্মান জানান গৌরনদী উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার (দপ্তর ও পাঠাগার) ও গৌরনদী উপজেলার সাবেক পরিসংখ্যান কর্মকর্তা খান মোঃ শামছুল হক।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব খান শামছুল হক জানান, করোনার মধ্যে মারা যাওয়া সহযোদ্ধাদের সৎকার অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অনেকটাই ঝুঁকি। তারপরেও রনাঙ্গনের সহযোদ্ধাদের শেষ বিদায়ে উপস্থিত থেকে সম্মান জানাতে পারায় নিজেকে গর্বিত মনে করছি। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির বীর সেনানী মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরবময় ভূমিকা চির স্মরনীয়। সেই বীর সন্তানদের শেষ বিদায়ে সরকারের পক্ষে রাষ্ট্রিয় সম্মান জানানো আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন, হোক তা যতই ঝুঁকিপূর্ন।