গৌরনদী
গৌরনদীতে অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলন, ঝুঁকিতে মুক্তিযোদ্ধার বসত ঘর
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী ইউনিয়নের পশ্চিম শাওড়া গ্রামের স্থানীয় এক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবৈধ ড্রেজার যন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বালু উত্তোলনের ফলে অত্যাধিক ঝুঁকিতে পড়েছে সরকারিভাবে পাওয়া মুক্তিযোদ্ধার বসত ঘর। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকসহ একাধিক মুক্তিযোদ্ধা গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
স্থানীয় লোকজন, মুক্তিযোদ্ধা ও গ্রামবাসি জানান, ৭১‘র পাক হানাদারদের সঙ্গে দক্ষিনাঞ্চলের প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ বরিশালের গৌরনদীর কটকস্থলের যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাককে মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহদান কর্মসূচীর আওতায় একটি সরকারি ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়। পরিবার পরিজন নিয়ে ওই ঘরেই তিনি বসবাস করেন। গত বুধবার থেকে তার ঘরের পাশে জলাশয় থেকে অবৈধ ড্রেজার যন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করেন প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী স্থানীয় মোঃ হেলাল চোকদার ও হালান সরদার। স্থানীয় একাধিকবার বালু উত্তোলনে নিষেধ করে এবং এক পর্যায়ে বাধা প্রদান করলে তা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যহত রাখেন হেলাল চোকদার।
ইউএনওর কাছে দেয়া অভিযোগে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক চোকদারের বসত ঘর সংলগ্ন জলাশয়ে বুধবার অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেন স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী মোঃ হেলাল চোকদার। এ সময় তাকে বালু উত্তোলনে বার বার নিষেধ করা হলেও তা অমান্য করে বালু উত্তোলন অব্যহত রাখেন। এক পর্যায়ে গ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গেলে তাদেরকে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন অব্যহত রাখে। এতে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক চোকদারের বসত বসতঘর জলাশয়ে বিলীন হওয়ার অত্যাধিক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শাহ আলম বেপারী (৬৮) অভিযোগ করে বলেন, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্নভাবে অবৈধ কিন্তু প্রভাবশালী হেলাল চোকদার দীর্ঘদিন যাবত এই অবৈধ মেশিন ব্যবহার করে গ্রামের বিভিন্ন পুকুর জলাশয়, ডোবা ও দীঘি থেকে বালু উত্তোলন করে বালুর ব্যবসা করে আসছে। ফলে গ্রামের রাস্তা ঘাট, বাড়ি ঘর ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। বর্তমানে এই জলাশয় থেকে বালু উত্তোলন করা হলে আমার মাছের ঘেরের দশ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হবে এবং মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাকের সরকারিভাবে পাওয়া ঘরটি জলাশয়ে বিলীন হয়ে যাবে। আমরা মুক্তিযোদ্ধার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রশাসন হেলাল চোকদারকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে নির্দেশ দেন কিন্তু তা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন অব্যহত রেখেছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই, এটা সম্পূর্ন অবৈধ। বালু উত্তোলনে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরেও নিষেধ ও আইন অমান্য করে বালু উত্তোলন করে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ বসতবাড়ি ও সরকারি সড়কের পাশ দিয়ে অবৈধ ডেজার বসিয়ে বালু উত্তোলণ করায় অভিযোগে পূর্বে একাধিকবার অবৈধ ড্রেজার মালিককে জড়িমানা করেছে প্রশাসন।