গৌরনদী
হত্যা মামলার বাদি ও স্বাক্ষিদের হয়রানী করতে একের পর এক মিথ্যা মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ হত্যা মামলা মিমাংসার বাধ্য করতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলা বার্থী ইউনিয়নের বেজগাতি গ্রামে মামলার বাদি ও স্বাক্ষিদের হয়রনী করতে একের পর মিথ্যা মামলা করেছে আসামিরা। গত এক সপ্তাহে আসামিরা বাদি ও স্বাক্ষিদের বিরুদ্ধে হামলা ভাঙচুর লুট, বাড়িতে আগুন, চুরি ও হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ করে মামলা ও অভিযোগ করেছেন।
মামলার বিবরন, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, উপজেলার বেজগাতি গ্রামের এসকেন হাওলাদারের পুত্র সোহের হাওলাদার(৩২)র সঙ্গে একই গ্রামের জয়নাল হাওলাদারের পুত্র রুবেল হাওলাদার(৩১)র জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গত ২ মে রুবেল হাওলাদার লোকজন নিয়ে সোহেল হাওলাদারের জমিতে ঘর তুলে গেলে বাধা দিলে রুবেল ও তার সমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে এসকেন হাওলাদার(৭০) তার স্ত্রী সেফালী বেগম(৫০)সহ ৫ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে এবং লুটপাট চালায়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ মে সেফালী মারা যান।
গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ জানান, এ ঘটনায় নিহত সেফালীর পুত্র সোহেল হাওলাদার বাদি হয়ে জয়নাল হাওলাদার(৬৫), পুত্র রুবেল হালাদার(৩১) স্ত্রী সোনিয়া বেগম(২৫), নয়ন হাওলাদার(২৬), লিটন হাওলাদার(৪৬) শিপন হাওলাদার(৩০)১২ জনকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সোনিয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠান। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছে।
মামলার বাদি সোহেল হাওলাদার জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে প্রভাবশালী আসামিরা মামলা প্রত্যাহারে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দিয়ে চাপ সৃষ্টি করেছে। এতে ব্যার্থ হয়ে সন্ত্রাসী দ্বারা হুমকি ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। তাতেও ব্যার্থ মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে একের পর এক হয়রানী করেছেন। গত এক সপ্তাহে বাদি ও স্বাক্ষিদের বিরুদ্ধে হামলা ভাঙচুর লুট, বাড়িতে আগুন, চুরি ও হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ৪টি অভিযোগ ও মামলা করেছেন।
সোহেল অভিযোগ করেন, হত্যা মামলার আসামিরা পালিয়ে গেলে পুলিশ তাদের বসত ঘর তালাবদ্ধ করে ঘরের চাবি স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় দেন। অথচ হত্যা মামলার প্রধান আসামির মা রেহানা বেগম বাদি হয়ে গত ২১ জুন বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে বাদি ও ১০ স্বাক্ষীকে আসামি করে হামলা ভাঙচুর ও লুটের মামলা দায়ের করেন। ২৫ জুন হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার অভিযোগ করেন। আসামিরা গত ২৭ জুন দিবাগত রাতে প্রধান আসামির বেজগাতি গ্রামের একটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। গ্রামবাসী আগুন নিভিয়ে ফেলে এতে ঘরে আংশিক পুড়ে যায়। বাদি ও স্বাক্ষাীদের বিরুদ্ধে ঘরের আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন। ২৮ জুন দিবাগত ভোর রাতে প্রধান আসামির বসত ঘরে মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। গ্রামবাসী টের পেয়ে ধাওয়া করলে ২ চোর পালিয়ে গেলেও বিলকিস বেগম (২৫)নামে এক নারী মালামাল সহ হাতে নাতে ধরা পড়ে। তাকে আটক করে ইউপি সদস্যের জিম্মায় নেওয়া হয়। আটককৃত বিলকিস জানান, হত্যা মামলার আসামি রুবেল হাওলাদার প্রতিপক্ষকে জব্দ করতে ঘরের মালামাল নেওয়ার জন্য তাদের তিনজনকে পাঠিয়েছে।
মিথ্যা মামলায় স্বাক্ষী করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন হাওলাদারকে। এ প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে আমি নিজেও জানিনা। আসামিরা সুবিধা নিতে আমার নাম ব্যবহার করেছে। এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন বাদি স্বাক্ষীদের বিরুদ্ধে আসামিদের দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মিথ্যা অভিযোগে আসামিদের কোন সুবিধা দেওয়া হবে না। তদন্তসাপেক্ষে মিথ্যা মামলায় অব্যহতি দেওয়া হবে।