সারাদেশ
উজিরপুরে শিশু বিক্রির চেষ্টা, আটক-১
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দত্তেশ্বর গ্রামে দুই মাসের একটি শিশুকে বিক্রির সময় গত শুক্রবার উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত নারীকে আটক করেছে। পরবর্তিতে ওই নারী ও শিশুটিকে স্থানীয় ইউপি সদসস্যের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দত্তেশ্বর গ্রামের দিনমজুর শহিদুল ইসলাম খানের স্ত্রী বকুলী বেগমের (৪৮) কয়েক দিন ধরে ঘরে দুই মাসের একটি লালন পালন করে আসছে। স্থানীয় রাহেলা বেগম (৪০) সহ কয়েকজন জানান, গত দুই দিনে ধরে শিশুটি ক্রয় করার জন্য বকুলী বেগমের কাছে নিঃসন্তান একাধিক দম্পতি আসা যাওয়া করে। এ সময় দুই এক জনের সঙ্গে দর কষাকষি করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি চূড়ান্ত করা হয়। এ বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে সন্দেহ দেখা দিলে তারা এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানান। একাধিক ব্যক্তি বিষয়টি উজিরপুর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জিয়াউল আহসান জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ দত্তেশ্বর গ্রামের শহিদুল ইসলাম খানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই মাসের পুত্র শিশু সন্তান উদ্ধার ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শহিদুলের স্ত্রী বকুলী বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদে বকুলী বেগম পুলিশকে জানান, শিশুটি ঝালকাঠী জেলার নলছিটি উপজেলার মগরা গ্রামের মৃত শরিয়ত খানের পুত্র জামাল খানের। আবার কখনো বলেন শিশুটি তার ভগ্নিপতি দত্তেশ্বর গ্রামের জনৈক ফারুক হোসেন বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দত্তক নিয়ে নিয়ে তার কাছে পালতে দিয়েছেন। কিন্তু কার কাছ থেকে দত্তক নিয়েছেন তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ফারুক হোসেন চট্রগ্রামে ব্যবসা করেন এবং তার স্ত্রী প্রবাশে থাকেন। বকুলী বেগমের দেয়া তথ্য যাচাই বাছাই করে সত্যতা পাওয়া যায়নি। শিশুটির সঠিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরে এ ব্যাপারে পরবর্তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। শিশুটি ও বকুলী বেগমকেও আপাতত শোলক ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল হক সরদারের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বকুলী বেগম শিশু বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, তার আত্মীয় ফারুক শিশুটি তার কাছে রেখে গেছেন। ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জিয়াউল আহসান বলেন, শিশুটির প্রকৃত পিতা মাতার খোঁজে তৎপরতা অব্যহত রয়েছে। প্রকৃত পিতা মাতার পরিচয় পেলে ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ শিশুটি তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। অন্যথায় বকুলী বেগমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।