প্রধান সংবাদ
উজিরপুরে আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরনবিধি লংঘনের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান নির্বাচনী লিফলেট ও পোষ্টারে প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিয়ে শ্লোগান ব্যবহারসহ আচরনবিধি লংঘনের করার অভিযোগ পাওযা গেছে। এতে ক্ষুব্ধ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন কমিশনের সিদ্বান্ত ব্যতিরেকে পোষ্টারে কিছু লেখা নির্বাচনী আচরনবিধির সু-স্পষ্ট লংঘন।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় কর্তৃক মার্কা বণ্টনে বরিশালের উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান কাপ পিরিচ প্রতীক বরাদ্ধ পান। পরবর্তিতে তিনি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পোষ্টার লাগান এবং লিফলেট বিতরন করেন। এতে লেখা রয়েছে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, তারপরে লেখা রয়েছে “শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন”।
উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদার গত শনিবার বরিশাল জেলা রির্টানিং ও উপজেলা সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে আচরনবিধি লংঘনের অভিযোগ করে পৃথক দুটি করেন। অভিযোগে বলা হয়, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজুর রহমান নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লংঘন করে পোষ্টার লিফলেট বিলি করেছে। তাছাড়া আচরন বিধি লংঘন করে মটরসাইকেল মহড়া দিয়ে উচ্চশব্দে হর্ন বাজিয়ে এলাকায় ভোটারদের মনে আতংক সৃষ্টি করছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার সম্পাদক মো. খবির উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মো. কামাল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্বাচিত করে দিয়েছেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্বান্ত উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে হাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রী ও দলের অবাধ্য কর্মী হয়েছেন। তিনি তার পোষ্টারে ও লিফলেটে দলীয় শ্লোগান জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু এবং “শেখ হাসিনার দর্শন সব মানুষের উন্নয়ন” লিখতে পারেন না। এটা দলের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারনা ও নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘন। উজিরপুর পৌর কাউন্সিলর ও উপজেলা যুবলীগের নেতা মো. বাবুল সিকদার বলেন, বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দক্ষিনাঞ্চলের অভিভাবক আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ ও সাধারন সম্পাদক সাবেক সাংসদ আইনজীবি তালুকদার মো. ইউনুসসহ স্থানীয় মনোনয়ন বোর্ড উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকদারকে মনোনয়ণ দেন। পরবর্তি প্রধানমন্ত্রী তা চূড়ান্ত করে ঘোষনা দেন। দলের সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান আবুল হাসনাত আবদুল্লাহরও অবাধ্য । দলীয় নেতাকর্মীরা ও সাধারন ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে হাফিজুরকে জবাব দিবে।
আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে নির্বাচনী পোষ্টার, লিফলেটসহ প্রচার প্রচারনায় আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নাম ও দলীয় শ্লোগান ব্যবহার করেছি। এটা কোন দোষের নয়। নৌকার প্রার্থীর অভিযোগ করাটা স্বাভাবিক। তবে নির্বাচন কমিশন যদি নিষেধ করে তাহলে তুলে নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আ: মজিদ সিকদার বাচ্চু বলেন, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। বরিশাল জেলা রির্টানিং ও উপজেলা সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তারাই ব্যবস্থা নিবেন। আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলীমুদ্দিন বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মোটর সাইকেল শোডাউন দেয়ায় ইতিমধ্যে কাপ-পিরিচ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজুর রহমানকে সর্তক করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া স্বত্তে¡ও হাফিজুর রহমান তার নির্বাচনী প্রচারনার পোস্টার-লিফলেটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নাম ও দলীয় শ্লোগান ব্যবহার করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আইনগতভাবে এটা করতে পারেন না। কমিশনের নির্ধারিত নিয়ম ব্যতিরেকে পোষ্টার কোন শ্লোগান লেখা অবৈধ। বিষয়টি অমরা অবগত উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্বান্ত নেওয়া হবে।