গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় কলেজ শিক্ষকের বাসস্থানে ছাত্রলীগ কর্মির হামলা, কুপিয়ে জখমের চেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আকন কামরুজ্জামানের বাসস্থানে গতকাল বুধবার সকালে ধারাল রাম দা ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায় আগৈলঝাড়া উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুর রইস সেরনিয়বাতের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মি পায়েল সেরনিয়াবাত(২১)। এসময় হামলাকারীরা কলেজ শিক্ষককে কুপিয়ে জখম করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বাসার দরজা ভাঙচুর বারান্দা তছনছ করেছে শিক্ষক অভিযোগ করেন।
কলেজ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালে ডিগ্রী প্রথম বর্ষের প্রথম পরীক্ষার দিনে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে পরীক্ষার্থী আগৈলঝাড়া উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুর রইস সেরনিয়বাতের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মি পায়েল সেরনিয়াবাত বহিস্কৃত হন। বহিস্কৃত হওয়ায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেডকে লাঞ্চিত করলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড ৬ মাসের বিনাশ্রম দ-ে দ-িত করেন। পায়েল বহিস্কৃত হওয়ার জন্য সহকারী অধ্যাপক আকন কামরুজ্জামানকে দায়ি করেন এবং জামিনে বের হওয়ার পর থেকে প্রতিশোধ নিতে তাকে খুজতে থাকেন। কামরুজ্জামান পায়েল কর্তৃক হুমকির বিষয়টি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কমলা রানীকে জানান কামরুজ্জামান। বিষয়টি জানতে পেরে সভাপতি লিয়াকত হোসেন ছাত্রলীগ কর্মি পায়েলকে শাসিয়ে দেন। এতে পায়েল আরো ক্ষিপ্ত হন।
আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক আকন কামরুজ্জামান জানান, গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা সদরে কলেজের পিছনের ভাড়াটিয়া বাড়িতে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। হঠাৎ করে আগৈলঝাড়া উপজেলা আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুর রইস সেরনিয়বাতের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মি পায়েল সেরনিয়াবাত(২১)র নেতৃত্বে ২/৩ জন ধারাল রাম দা নিয়ে দৌড়ে তার বাসার দিকে আসতে দেখে তিনি দরজা লাগিয়ে দেন। এ সময় পায়েল রাম দা দিয়ে কুপিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে । আকন কামরুজ্জামান বলেন, ভিতরে ঢুকেই রাম দিয়ে আমাকে এলোপাতারিভাবে কোপাতে থাকে । আমি ষ্টিলের চেয়ার দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে চেষ্টা করি। এর মধ্যে কলেজর পিয়ন যতিন্দ্র নাথ(২৭)সহ কয়েকজন ছাত্র আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদের মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে কলেজের শিক্ষক, স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা বেরিয়ে যান। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাবা আ.লীগ নেতা আব্দুর রইস সেরনিয়াবাত বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক, কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিমাংসার উদ্যোগ গ্রহন করেছেন।
কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. লিয়াকত হোসেন হামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পায়েল কর্তৃক হুমকির বিষয়টি কামরুজ্জামান আগেই আমাকে জানিয়েছিল। হামলার খবর পেয়ে আমি বিষয়টি ইউএও ও ওসিকে জানিয়েছি। আমরা কলেজ শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি ঘটনার নিন্দা জানাই। আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, বিষয়টি শোনার পরে পুলিশ পাঠিয়েছি, শুনেছি মিমাংসা হয় গেছে। তাছাড়া লিখিত কোন অভিযোগ পই নাই।