গৌরনদী
ছাত্রী উত্যক্তকে কেন্দ্র করে আগৈলঝাড়ায় ছাত্রলীগ দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের গ্রেপ্তার-২
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে ছাত্রী উত্যক্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলা পাল্টা হামলায় উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা প্রদানও ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিন্টু সেরনিয়াবাত বাদি হয়ে ২৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ দুই জনকে গেপ্রÍার করে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, গত বুধবার জেএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রধান ফটকে উপজেলার জবসন গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে নগরবাড়ি গ্রামের কতিপয় যুবক উত্যক্ত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল ১১টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মি জবসন গ্রামের মো. আসাদুজ্জামান(২২)র সঙ্গে উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি মো. এনায়েত হোসেনের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মি ও নগরবাড়ি গ্রামের মো. সাকিল খান(২৪)র বাক বিতা-া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মো. আসাদুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, তার গ্রামের একটি মেয়েকে উত্যাক্ত করে নগরবাড়ি গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মি উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি মো. এনায়েত হোসেনের পুত্র সাকিল খান। আমি এর প্রতিবাদ করলে সাকিল তার সন্ত্রাসী সহযোগীদের নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। আমাকে রক্ষায় আমার গ্রামের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরকে পিটিয়ে জখম করা হয়। এ অভিযোগ অস্বীকার করে মো. সাকিল খান বলেন, সন্ত্রাসী আসাদুজ্জামান তার দলবল নিয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে। আমি কোন হামলার ঘটনায় জড়িত নই।
আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিন্টু সেরনিয়াবাদ বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলার জবসন ও নগরবাড়ি গ্রামের দুইদল ছাত্রলীগ কর্মির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই বিষয়টি মিমাংসার জন্য আমার উদ্যোগে দুপুর ১২টায় আমি ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. জাকির পাইকসহ নেতৃবৃন্দ আগৈলঝাড়া উপজেলা আ.লীগ কার্যালয়ে বৈঠক বসি। বৈঠক চলাকালে সাকিল খানের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জন কর্মি লাঠিসোটা নিয়ে আ.লীগ কার্যালয়ে বৈঠকে হামলা চালায়। এ সময় কয়েক দফা হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা আ.লীগ কার্যালয়ের চেয়ার টেবিল তছনছ করে। সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মি আসাদুজ্জামান নূর, রফিক পাইক, রাজু সরদার, নাফিজ পাইক, নাঈম পাইক, আবু বকর, শাকিল গ্রুপের শাকিল খান, মো. অহিদুল, মো. টিপু ও রাব্বিসহ ১০জন আহত হয়। আহত ৮ জনকে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্র কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এবং গুরুতর আহত রফিক পাইক ও আরিফ হোসেনকে ভর্তি করা হয়। তিনি আরো বলেন, এটা কোন রাজনৈতিক ঘটনা নয়। নেহায়েত ব্যক্তিগত বিষয়। এদিকে আগৈলঝাড়া উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শামছুল হক ও সাধারন সম্পাদক মো. হেমায়েত হোসেন লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীন কোন্দলের ঘটনায় সংঘর্ষ সংগঠিত হয়। অথচ একটি বিশেষ মহল ওই ঘটনাটি ছাত্রদলের উপর চাপিয়ে দিয়ে ছাত্রদলে নেতা কর্মিকে হয়রানী করে। ছাত্রদলকে জড়িয়ে হয়রানীর নিন্দা জানিয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মিকে হয়রানী না করতে আহবান জানান।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মিন্টু সেরনিয়াবাত বাদি হয়ে গত বুধবার গভীর রাতে সাকিল খানকে প্রধান আসামিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই সাকিল খান ও মো. ইউসুফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বৃহস্পতিবার অঅদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে।