প্রধান সংবাদ
আগৈলঝাড়ায় নয় গ্রামের মানুষ পানিবন্দি
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার আগৈলঝাড়া পয়সারহাট খালের সংযোগ মুখে অগৈলঝাড়া বাজারে পশ্চিম পাশে বাঁধ দিয়ে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করলে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের নয়টি গ্রামের ১০/১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পরেছে। পানিবন্দি লোকজন জানান, জলাবদ্ধতায় নয় গ্রামের মৎস্যজীবি মাছের ঘের, পানের বরজ ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে কমপক্ষে অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনার ক্ষতিপুরন ও প্রতিকার চেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা গত রবিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় লোকজন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার আগৈলঝাড়া পয়সারহাট খালের সংযোগ মুখে অগৈলঝাড়া বাজারে পশ্চিম পাশে বরিশাল এলজিইডি একটি ব্রিজ নির্মানের জন্র প্রকল্প গ্রহন করেন। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে ব্রিজ নির্মানের জন্য ১ কোটি ১৭ লাখ টাকার প্রাককলন তৈরী করেন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ২০১৪ সালের মার্চ মাসে দরপত্র আহবান করেন। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঠিকাদার মেসার্স সাইফউদ্দিন ট্রেডার্সকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কার্যাদেশের শত অনুযায়ী গত জানুয়ারি মাসে নির্মানকাজ শেষ করার কথা ছিল। স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদার গাফলতি করে নির্মান কাজ বন্ধ রেখে বর্ষা মৌসুমে নির্মান কাজ করেন। নির্মান কাজ করতে গিয়ে অসময়ে বর্ষা মেসৈুমে খালের মধ্যে বাঁধ দেন।
বাকাল গ্রামের রাজেশ্বর বাড়ৈ (৪৫), গৈলা গ্রামের সানাউল্লাহ মোল্লা(৩২), শিহিপাশা গ্রামের সোবাহান সরদার(৫৫) জানান, ঠিকাদার শুস্ক মৌসুমে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার কাজ না করে ফেলে রেখে গত কয়েকদির আগে বর্ষা মৌসুমে খালে বাঁধ দিয়ে নির্মান কাজ শুরু করেন । এতে খালে পানির চাপ থাকা এবং মুসলধরে বৃষ্টির কারনে পানি প্রবাহ না থাকায় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী জানান, ব্রিজ নির্মানের জন্য খালে বাঁধ দেওয়ায় বাধেঁর মধ্যে উত্তর অংশে থাকা আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাজিহার, বাকপাড়া, রাংতা, বাকাল ইউনিয়নের বাকাল, ফুলশ্রী, জবসন ও গৈলা ইউনিয়নের গৈলা, সুজনকাঠী ও শিহিপাশা গ্রামের ৯টি গ্রামের ১০/১২ হাজার মানুষ জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ ও এলাকাবাসী জানান, জলাবদ্ধতায় নয় গ্রামের মৎস্য, কৃষি, পানবরজ ও শাকসবজিসহ প্রায় অদর্;কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। অগৈলঝাড়া উপজেলা সহকারী কৃষি অফিসার মো. জাফর আহম্মেদ জানান, জলাবদ্ধতায় মানুষের অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পান বরজ ও মৎস্য চাষীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
উপজেলার জবসেন গ্রামের পানচাষী আবু তালেব(৪৫) জানান, ধার দেনা করে ২০ শতাংশ জমিতে পানচাষ করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই দিনকাল চলছিল। হঠাৎ জলাবদ্ধতায় সব শেষ হয়ে গেছে। ফুলশ্রী গ্রামের মৎস্যজীবি মো. খলিলুর রহমান(৩২) জানান, জলাবদ্ধকায় তার মৎস্য ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে তার প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কথা জানালেন, রাংতা গ্রামের সিরাজুল ইসলাম, রাজিহার গ্রামের জলিল বেপারী, বাকপাড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান, ও সুজনকাঠি নেছার উদ্দিনসহ অনেকেই। তাদের অভিযোগ ঠিকাদারের গাফলতি ও অসময়ে নির্মান কাজ করার ফলে তাদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া সহ স্বাভাবিক জীবন যাপনে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী গত রবিবার দুপুরে ক্ষতি পুরন ও প্রতিকার চেয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলার দায়িত্ব থাবা নির্বাহী অফিসা ও সহকারী কমিশনার(ভ’মি) শতরূপা তালুকদারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের ব্যপারে ঠিকাদার মেসার্স সাইফউদ্দিনের প্রোপ্রাইট আবদুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মিজানুর রহমান অভিযোগের সত্যতা সঈকার করে বলেন, পুরান ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় এ সমন্যার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতা দুরীকরনে সব ধরনের চেষ্ট করছি আশা করি ২/৪ দিনের মধ্যে সম¯্রারসমাধান হবে। কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ সত্য, কার্যাদেশের সময় সীমার মধ্যেই নির্মানকাজ শুরু করেছি। অতিবর্ষার কারনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে শতরূপা তালুকদার বলেন, বাঁধ দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে কিনা, তা আগেই এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তখন তিনি জানিয়েছিলেন জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভবনা নেই। তাহলে কাজ শুরুর পর কেন সমস্যা হলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগৈলঝাড়া এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী রাজ কুমার গাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অতি দ্রুত বাঁধে বড় আকারের পাইপ বসিয়ে জলাবদ্ধতা নিস্কাশনের ব্যবস্থাসহ জনসাধারনের দূর্ভোগ লাঘব করা হবে।
জাতীয় করনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন ॥
উজিরপুরে বিএনখান ডিগ্রী কলেজে ৫ম দিনে
বিক্ষোভÑসড়ক অবরোধ, অনিদৃষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষনা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ সকল শর্ত পুরন করার পরেও বরিশালের উজিরপুর উপজেলা সদরের বি,এন,খান ডিগ্রী কলেজ সরকারি না করায় লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। আন্দোলনের ৫ম দিনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে। এছাড়া আজ ( আগামিকাল) বুধবার থেকে কলেজে তালা ঝুলিয়ে অনিদৃষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ঘোষনা দেন।
কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী জানান, সকল শর্ত পুরন করার পরেও বরিশালের উজিরপুর উপজেলা সদরের বি,এন,খান ডিগ্রী কলেজ সরকারি করা হয়নি। জাতীয়করনের বিধিমালা লংঘন করে শের ই বাংলা ডিগ্রী কলেজকে জাতীয়করনের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে হয়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে কলেজটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। লাগাতার আন্দোলনের ৫ দিনে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালন করেছে। সকাল ১১টায় কলেজ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে উজিরপুরÑসাতলা সড়কের চৌমাথা টেম্পুষ্টান্ডে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছে।
এসময় সড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকা পরে ঝানঝটের সৃষ্ঠি হলে সাধারন মানুষককে দূর্ভোগ পোহাতে হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক জ্যোাতিষ চন্দ্র ওঝা, এটিএম, নজরুল ইসলাম, ফিরোজুল ইসলাম, কাঁলাচাদ সাহা, শাহানা আক্তার, অভিভাবক নজরুল ইসলাম হাওলাদার, শিক্ষার্থী মো. সোহাগ সরদার, জুনায়েদ খান প্রমূখ। বক্তারা কলেজকে জাতীয় করনের ঘোষনা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষনা দেন। আন্দোলনের পরবর্তি কর্মসূচী হিসেবে তারা আজ বুধবার থেকে কলেজের পাঠদান কক্ষে তালা ঝুলিয়ে অনিদৃষ্টকালের জন্য ধর্মঘটোর কর্মসূচী ঘোষনা করেন। কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোর্শেদ বলেন, উজিরপুরবাসীর প্রানের দাবি পুরন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।