গৌরনদী
গৌরনদীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৩৯টি দোকান ভস্মীভূত ২ কোটি টাকার ক্ষতি \ আহত- ৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/
বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ২৫টি দোকান সম্পূর্ণ ও ১৪টি দোকান আংশিক ভস্মীভূত হয়েছে। অগ্নিকান্ডে প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও ব্যবসায়ীরা জানান। আগুন নেভাতে গিয়ে স্থানীয় ৫ জন আহত হয়েছে। এ অগ্নিকান্ডের ফলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক ও বরিশাল গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে কয়েক হাজার যাত্রীকে দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
গৌরনদী ফায়ার ষ্টেশনের ইনচার্জ আব্দুস ছালাম জানান, রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গৌরনদী উপজেলা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের নিজাম সরদারের চায়ের দোকান থেকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা ২০/২৫ ফুট উচ্চতায় উঠে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা রাত পোনে ৪টায় ঘটনাস্থলে পৌছে গাড়িতে থাকা রিজার্ভ পানি দেয়ার পরে পাম্প বিকল হওয়ায় আর পানি দিতে পারেনি। ফলে আগুনের বিভিশিখা ছড়িয়ে পরে দুই ঘন্টার আগুনে প্রায় মার্কেটের ৩৯ টি দোকান ভস্মীভূত হয়। পরবর্তিতে সকাল সাড়ে ৫টার দিকে বরিশাল ও উজিরপুর ফায়ার সার্ভসের ৪টি ইউনিটির কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছে সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। এরই মধ্যে অগ্নিকান্ডে মেসার্স সোহেল টেডার্স, শহিদুল ষ্টোর, সরদার ইলেকট্রিক, স্বাধীন ষ্টোর, হাবিব ষ্টোর, জাহিদ ষ্টোর, জালাল ষ্টোর, আরিফ ষ্টোর, সারদিয়া টেলিকম, কমলেশ ষ্ট্যাডিও, জয়গুরু মিস্টান্ন ভান্ডার, জাকির ডিজিটাল প্রেসের শো-রুম, ফিরোজ মেকার, মনো হেয়ার কার্টিং, বি আলম ষ্টোর, নান্নু হোটেল, গৌরনদী অটোটেম্পু -মাহিদ্রা শ্রমিক কার্যালয়, নিজামের চায়ের দোকানসহ ২৫টি দোকান সম্পূর্ণ ও আকিব ইলেকট্রিক, মনির মেকার, আমার ফোন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার, মাষ্টার ইলেকট্রিক, ফরিদ মিয়ার গোডাউনসহ ১৪টি দোকান আংশিক ভস্মীভূত হয়েছে। আগুন নেভাতে গিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, সঞ্জয় কুমার পাল, সোহেল শিকাদর, আরিফ হোসেন, মোঃ খলিল আহত হয়েছে।
ব্যবসায়ী মাসুম সরদার (৩৫), সানোয়ার হোসেন (৪২)সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফলতির কারনে ৪০ টি দোকান ভস্মীভূত হয়েছে। তারা আগুন লাগার ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌছলেও পাম্প বিকল বলে আগুন নেভাতে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। তারা পৌছার পরে আগুন নেভাতে শুরু করলে কোন ক্ষয়ক্ষতি হত না। হাজার হাজার মানুষ দেড় থেকে দুই ঘন্টা দাড়িয়ে দাড়িয়ে আগুনের ধ্বংশত্মক দেখলেও আগুনের তীব্রতা থাকায় কেউ এগুনে পারেনি। অগ্নিকান্ডের ফলে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক ও বরিশাল গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে শত শত যাত্রীবাহি নৈশ বাস আটকা পরে কয়েক হাজার যাত্রীকে দূর্ভোগ পোহাতে হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে গৌরনদী ফায়ার ষ্টেশনের ইনচার্জ আব্দুস ছালাম বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ৩ মিনিটের মধ্যে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছি কিন্তু সাধারন মানুষের বিশৃংখলার কারনে পাম্প কিছু সময়ের জন্য বিকল হয়ে পড়লে আগুন ছড়িয়ে পরে। পরে উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, বরিশাল কর্মীদের সহায়তায় আমরা আগুন নিয়ন্ত্রনে আনি।
বরিশাল-১ আসনের সাংসদ, মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, বরিশাল জেলা প্রশাসক এস,এম অজিয়র রহমান, উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, ইউএনও ইসরাত জাহান ও উপজেলা ও পেরৈ আওয়ামীরগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।