গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ॥ বিয়েতে রাজি করতে নির্যাতন, চাচার এক বছর কারাদ-, নির্যাতিতার দায়িত্ব নিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বাল্য বিয়েতে স্কুল ছাত্রী ও তার মা বোন রাজি না হওয়ায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় গতকাল গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আগৈলঝাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) গাজী তারিক সালমন স্কুল ছাত্রীর চাচা রনি কর(২৬)কে এক বছরের কারাদ-ে দ-িত করেছে। দ-িত চাচা রনি করকে গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক(এস,আই) মো. মোশারফ হোসেন জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার রতœপুর ইউনিয়নের বারপাইকা গ্রামের নিপুল করের কন্যা ও বারপাইক্কা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী নিলিমা কর (১৬) বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সোমবার রাতে স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে মা ও দুই বোনকে রক্তাক্ত জখম করে সন্ত্রাসীরা। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে স্কুল ছাত্রী আগৈলঝাড়া নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিলে গেলে বখাটে অমল সরকার(২২) স্কুল ছাত্রীকে অপহরনের চেষ্টা চালায়।
আগৈলঝাড়া নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের একটি সূত্র জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ স্কুল ছাত্রীর চাচা রনি করকে আটক করে আগৈলঝাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও)র কার্যালয়ে হাজির করে। এসময় বাল্য বিবাহে বাধ্য করতে স্কুল ছাত্রী ও পরিবারে উপর নির্যাতন করার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় চাচা রনি করকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদ-ে দ-িত করে।
আগৈলঝাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) গাজী তারিক সালমন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭র ৮ধারায় চাচা রনি করকে এক বছর বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সমাজসেবা অতিরিক্ত দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্কুল ছাত্রী নিলিমা কর নিশিকে দেখতে গিয়ে তাদের চিকিৎসার দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। তবে উপজেলায় একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের অস্তিত্ব থাকলেও পুলিশ তিনদিনেও শিক্ষার্থীর মামলা না নেয়ায় আইনী সহায়তার প্রদানের জন্য তাদের কোন ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ছাত্রী ও তার মা অনিতা করকে হাসপাতালে দেখতে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী তারিক সালমন। এসময় তার সাথে ছিলেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দীপিকা রানী সেন। তারা হাসপাতালে স্কুল ছাত্রী ও তার মায়ের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা দিপীকা রানী সেন জানান, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সাহসী ভূমিকা পালন করায় নিলিমা কর নিশির ব্যাপারে মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মন্ত্রণালয় থেকে সচিব ফোনে তার কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।