গৌরনদী
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর থেকে লক্ষাধিক টাকার ঔষধ গায়েব
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকের স্টোর থেকে লক্ষাধিক টাকার ঔষধ গায়েব হয়ে গেছে। ষ্টোর ভেরিফিকেশেন কমিটির যাচাই বাচাই কার্যক্রমে ঔষাধ গায়েবের বিষয়টি ধরা পড়ে। যাচাই বাচাই প্রথম দিনে মঙ্গলবার ঔষধ গায়েবের বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকে কার্যক্রম পরিচালনায় অসহোযোগীতা করেছেন ষ্টোর কিপার মো. সাইদুর রহমান। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সরকারি ঔষধ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
হাসপাতাল, ভেরিফিকেশন কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ি প্রতি তিন বছর পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ষ্টোর ভেরিফিকেশন করা হয়। চলতি বছর গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ষ্টোর ভেরিফিকেশন করার জন্য উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামছউদ্দিনকে সভাপতি গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেেিকল অফিসার ডা. অমূল্য রতন বাড়ৈ ও ফার্মাসিষ্ট মো. আনিসুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভেরিফিকেশন কমিটির একাধিক সদস্য জানান, তারা গত মঙ্গলবার ষ্টোর ভেরিফিকেশনের কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথম দিনে ষ্টোরে অমিপ্রাজল ক্যাপসুল (ড়সবঢ়ৎধুড়ষব) সাড়ে পাঁচ হাজার পিস ও মণ্টিলুকাষ্ট ট্যাবলেট (সড়হঃরষঁপধংঃ) প্রায় সাড়ে ৩ হাজার পিস স্টোরে পাওয়া যায়নি। প্রথম দিনেই প্রায় লক্ষাধিক টাকার ঔষধ না থাকার বিষয়টি ধরা পরে। তারা অভিযোগ করেন, তাদের যাচাই বাচাইর কার্যক্রমের প্রথম দিনে স্টোরে ঔষধ না থাকার বিষয়টি ধরা পরার পর থেকে স্টোর কিপার সাইদুর রহমান তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় অসহোযোগীতা করে আসছেন। প্রথম দিন কাজ করার পরে অসহযোগীতার কারনে পরবর্তি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানান, গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য সরকারিভাবে বছরে প্রায় ৫ থেকে ৭ লক্ষ টাকার সরকারি ঔষদ সরবারহ করা হয়। ষ্টোর কিপার সাইদুর রহমান সরকারি ঔষধ প্রত্যন্ত পল্লি এলাকার ফার্মেসী, বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে বিক্রি করে থাকেন। ভেরিফিকেশন কমিটির কার্যক্রম বন্ধ রেখে ষ্টোরে ঘাটতি পুরন করতে বাহির থেকে ঔষাধ সংগ্রহ করে সমন্বয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন সাইফুর রহমান। ইতোমধ্যে কিছু ঔষধ যোগার করেছেন।
ভেরিফিকেশন কমিটির সদস্য ও গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার অমূল্য রতন বাড়ৈ স্টোর ঔষধে ঘাটতি থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা একদিন কাজ করার পর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এখনো কার্যক্রম শেষ হয়নি। কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর বেশী কথা বলবো না। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর কিপার মো. সাইদুর রহমানের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সরকারি ঔষদ বেসরকারি ক্লিনিকে বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগ সঠিক না। স্টোরে সব কিছুই ঠিকঠাক আছে। ষ্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. মনিরুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, ষ্টোরের ঔষধ গায়েব কথাটি ঠিক না। এলোমোলো রাখার কারনে পাওয়া যাচ্ছিল না পরবর্তিতে পাওয়া গেছে। মনিরুজ্জামানের এ দাবি প্রত্যাখান করে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, এখনো ঘাটতি পুরন করা হয়নি। বিষয়টি ম্যানেজের চেষ্টা চলছে। এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ষ্টোর ভেরিফিকেশন কমিটির সভাপতি উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামছউদ্দিন স্টোরে গড়মিল থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আজ বুধবার থেকে পুনরায় ভেরিফিকেশন কমিটির যাচাই বাচাই কার্যক্রম করা হবে। ষ্টোর কিপার সাইদুর রহমান কার্যক্রমে পরিচালনা ভেরিফিকেশন কমিটিকে অসহোযোগীতা করলে তার বিরুদ্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানানোা হবে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি শুনেছি, চূড়ান্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।