গৌরনদী
মোংলায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা, বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে অগ্নিকান্ডের দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে
মোঃ নূর আলম, মোংলা থেকেঃ বার বার সুন্দরবনে অগ্নিকান্ডের ফলে সামগ্রিক ভাবে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে। বড়গাছসহ লতাগুল্ম মারা যায়। প্রাণীকূলের আবাস ও প্রজননস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বন্যপ্রাণীরা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে। বনের শৃংখলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পড়ে বনের প্রাণীকূলের খাদ্যচক্রে। চরম আঘাত আসে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রের উপরে। অসৎ বনকর্মকর্তাদের যোগসাজশে মুনাফালোভী মাছ ব্যবসায়ীরা বারে বারে সুন্দরবনে আগুন লাগাচ্ছে। কাজেই বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে অগ্নিকান্ডের দায়ভার বনবিভাগকেই নিতে হবে।
মঙ্গলবার সকালে মোংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে ”বার বার আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনঃ দায় কার, করণীয়” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর নেতা অধ্যক্ষ মোঃ সেলিম, কমলা সরকার, হাছিব সরদার, সুন্দরবনের জেলে সমিতির সভাপতি বিদুৎ মন্ডল, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার নাজমুল হক ও শেখ রাসেল। লিখিত বক্তব্যে সুন্দরবন রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়কারী পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ আরো বলেন, প্রতি হেক্টর সুন্দরবনের প্রতিবেশসেবার আর্থিকমূল্য ৪৫৬ থেকে ১ হাজার ৯২ মার্কিন ডলার। এই হিসেবে বছরে সুন্দরবন ২৭ কোটি থেকে ৭১ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমান প্রতিবেশসেবা প্রদান করে চলেছে। জেলে সমিতির সভাপতি বিদ্যুৎ মন্ডল বলেন, প্রকৃত জেলেরা সুন্দরবনে কখনো আগুন লাগাতে পারেনা। কতিপয় মুনাফালোভী অসৎ মাছ ব্যবসায়ী ও অসাধু বনকর্মতারা মিলে সুন্দরবনে আগুন লাগিয়ে থাকে। অগ্নিকান্ডের সাথে যারাই জড়িত থাকুন না কেন আইনের আওতায় এনে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। সংবাদ সম্মেলনে, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সুন্দরবন রক্ষায় আমরা ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের পক্ষ থেকে অগ্নিকান্ড বন্ধে কতক সুপারিশ করা হয়। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, অগ্নিকান্ডের কারন জানতে ও অগ্নিকান্ড বন্ধে বনবিভাগসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য, সুন্দরবন গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় জনগণ ও নাগরিক এবং পরিবেশ সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবী জানানো হয়। ওয়াচটাওয়ার নির্মান, বনের মধ্যে অবাধ যাতায়াত বন্ধ, সুন্দরবনে ইআইএ ব্যতীত অপরিকল্পিত খাল খনন বন্ধ, মৌয়ালদের প্রশিক্ষণ, সুন্দরবন রক্ষায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির সুপারিশ করা হয়। এছাড়া সুন্দরবন রক্ষায় ড্রোন ক্যামেরা, সিসিটিভি ক্যামেরাসহ বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।